ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, কেউ কোরবানির পশুর হাটে জাল টাকা ছড়িয়ে প্রতারণার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, জাল টাকার কারবারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ছিনতাইকারী, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির বিরুদ্ধেও আমারা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।
আইজিপি আজ দুপুরে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ও গরুর হাট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন। আইজিপি যাত্রীদের সাথে কথা বলেন এবং কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা সম্পর্কে বেপারীদের কাছ থেকে খোঁজখবর নেন। তিনি যাত্রীদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন।
আইজিপি বলেন, এবারের ঈদে মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, নৌ পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, এপিবিএন, র্যাব, পুলিশের বিশেষায়িত অন্যান্য ইউনিট একযোগে একসাথে কাজ করছে। আমাদের সাথে প্রশাসন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকও কাজ করছেন। মানুষকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে আমরা সকলে মিলে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
পুলিশ প্রধান বলেন, সরকার রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আমাদের গর্বের পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে মানুষ স্বস্তিতে তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারছেন।
তিনি বলেন ,আমরা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রেখে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমাদের সিনিয়র অফিসাররাও ২৪ ঘন্টা রাস্তায় থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা সবসময় জনগণের পাশে থেকে তাদেরকে সেবা দিতে চাই। তিনি যে কোন প্রয়োজনে নিকটস্থ থানা অথবা ৯৯৯-এ যোগাযোগ করার জন্য যাত্রী সাধারণের প্রতি অনুরোধ জানান।
আইজিপি বলেন, হাইওয়েতে ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। যাত্রী সাধারণের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি অথবা খোলা ট্রাকে ভ্রমণ করবেন না।
আইজিপি পশুবাহী পরিবহনের সামনে গন্তব্যস্থান অথবা পশুর হাটের নাম লিখে ব্যানার টানিয়ে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান।
আইজিপি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গত ঈদুল ফিতরের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক ছিল, জনগণ স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছেন। তিনি বলেন, গতবারের অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা এবারও আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজিয়েছি। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এবারও একটি সুন্দর ঈদ উপহার দিতে সক্ষম হবো।
আইজিপি বলেন, ঈদের ছুটিতে অনেকে শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাবেন। পর্যটন কেন্দ্রে জনসমাগম ঘটবে। আমরা সকল বিষয় মাথায় রেখে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশকে সার্বিক নির্দেশনা প্রদান করেছি।
তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে ফাঁকা বাড়ি পাহারায় পরিচিত ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে নিয়োজিত করুন। ঈদে যারা শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাবেন তারা নিজেদের মূল্যবান সামগ্রী নিরাপদে রাখবেন।
এ সময় ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, সিটিটিসি প্রধান মোঃ আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ হারুন অর রশিদ এবং অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
পরে আইজিপি সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল পরিদর্শন করেন। তিনি লঞ্চ মালিক ও চালক এবং যাত্রীদের সাথে কথা বলেন ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, নৌ পুলিশের ডিআইজি মোঃ মিজানুর রহমান এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ সময় আইজিপির সাথে ছিলেন।
সবশেষে আইজিপি কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন। তিনি যাত্রীদের খোঁজখবর নেন এবং রেলওয়ে স্টেশনের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।
এ সময় ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মোঃ কামরুল আহসান, রেলওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ দিদার আহম্মদ, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ কামরুল আহসান এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ আইজিপির সাথে ছিলেন।