প্রেস রিলিজ
প্রতিনিয়ত অবহেলা, বৈষম্য, সামাজিক প্রতিবন্ধকতাসহ নানা ধরনের অধিকার বঞ্চিত ঋষি সম্প্রদায়ের মানুষ ।না পাওয়ার হাহাকার, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে বসবাস এ যেন তাদের নিত্য দিনের চিত্র।
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার রাজধানীর আদাবরে অবস্থিত সিদীপ কনফারেন্স হলে ঋষি সম্প্রদায়ের চিহ্নিত চারটি অগ্রাধিকারমূলক সমস্যা নিয়ে সমমনা নেটওয়ার্ক,প্লাটফর্ম ও সংশ্লিষ্ট ষ্টেকহোল্ডারদের সাথে রোড ম্যাপিং কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
ইউএসএইড এর অর্থায়নে কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল এর কারিগরী সহায়তায় গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থা (জিবিএসএস) কর্তৃক বাস্তবায়িত ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার উন্নয়ন প্রকল্প এর আওতায় গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থা (জিবিএসএস) ও ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গঠিত অ্যাডভোকেসী ফোরাম যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করেছে।
প্রায় ১৫ লক্ষ ঋষি জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঢাকা শহর ও এর আশেপাশে ২৬টি ক্লাস্টার বা পাড়ায় প্রায় দুই লাখ ঋষি সম্প্রদায়ের মানুষ অত্যন্ত অমানবিক অবস্থায় বসবাস করছে।তাদের বেশীরভাগই নিম্নবর্ণের এবং চামড়া জাত কাজের সাথে বিশেষ করে পাদুকা শিল্পের সাথে জড়িত। জাতিগত এই সংখ্যালঘু ঋষিরা স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং ন্যায় বিচারের পাশাপাশি অন্যান্য সাংবিধানিক অধিকারসহ নানা নাগরিক সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত, জীবিকাও অনিশ্চিত, সামাজিক পরিচয় ও মর্যাদা কম থাকায় শিক্ষা ও অর্থনৈতিক সুযোগ বা ন্যায় বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রেও তাদের প্রবেশাধিকার সীমিত। এই সম্প্রদায়ের মানুষগুলো সামাজিক, মানবিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সুবিধাপ্রাপ্তি থেকে পিছিয়ে আছে। এই গোষ্ঠীগুলি অবহেলা, বৈষম্য, সামাজিক প্রতিবন্ধকতাসহ নানা ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত। অথচ এসডিজি’র এজেন্ডা হচ্ছে “কাউকে বাদ দিয়ে নয়” তাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুনির্দিষ্ট প্রতিবন্ধকতা দূর না করা পর্যন্ত বাংলাদেশের পক্ষে এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয় ।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাংবিধানিক ধারা মোতাবেক রাষ্ট্রের সকল জনগোষ্ঠীর মানুষ তাদের মৌলিক/ মানবিক সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখার কথা উল্লেখ থাকলেও স্বল্প শিক্ষার হার এবং মানবিক, মানসিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে ঋষি সম্প্রদায় তাদের মৌলিক ও মানবিক অধিকার প্রাপ্তি থেকে উপেক্ষিত এবং অধিকাংশের কাছে তারা ঘৃণার পাত্র হিসেবে পরিগণিত। ঋষি জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকার এবং সরকারি সেবায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
তাই জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আত্মকর্মসংস্থান প্রভৃতি বিষয়ে ঋষি সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ বরাদ্দ প্রণয়ন পূর্বক প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া জরুরী।জাতীয় সংসদ সদস্য,নীতিনির্ধারক,সরকারী বিভিন্ন দপ্তর এবিষয়ে ভূমিকা রাখতে পারে।কর্মশালালায় ঋষিসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠির উন্নয়নে মন্ত্রনালয় ও সিটি কর্পোরেশন ভিত্তিক বিভিন্ন অধিদপ্তর/উপঅধিদপ্তর/টাস্কফোর্স গঠন করা,পাদুকা শিল্পের সাথে জড়িত ঋষি সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য উন্নয়ন তহবিল/ফান্ড এবং পঞ্চায়েত কমিটিকে জায়গা বরাদ্ধ প্রদানপূর্বক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, ঋষি সম্প্রদায়ের নারী/শিশুর জন্য সরকারী সেবায় অগ্রাধিকার/ আলাদা কোটা প্রদানের ব্যবস্থা করা, সিটি কপোরেশন /ওয়ার্ডের বিভিন্ন কমিটিতে ঋষি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব রাখা,জাতীয় গৃহায়ন ও শিক্ষা নীতিমালায় ঋষিসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠির প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রস্তাব করা হয়
স্বাগত বক্তব্য রাখেন গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাকসুদা
ফারুকী রত্না এসময় উপস্থিত ছিলেন ডনাইপ্রু নিলি নির্বাহী পরিচালক অন্যন্যা কল্যাণ সংগঠন (একেএস) বান্দর বন জাহানারা আক্তার নির্বাহী পরিচালক জীবন সন্ধানী সমাজ কল্যাণ সংস্থা জি বি এস এস এর কোষাধ্যক্ষ মোঃ এ জাবুদউল্লা প্রকল্প সমন্বয়কারীসহ ঋষি সম্প্রদায়ের ষ্টেকহোল্ডার সহ আরো অনেকে।