চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান মিজান ভোট বর্জন করেছেন।
রোববার (৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় নিজ সমর্থক ও নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে সরাসরি বক্তব্য প্রদান ও নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে ওই বক্তব্য লাইভ সম্প্রচার এর মাধ্যমে তিনি ভোট বর্জনের ডাক দেন। এ সময় তিনি প্রত্যেক কেন্দ্রে অবস্থিত তার ফুলকপি প্রতীকের নির্বাচনী এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের হয়ে চলে আসার আহবান জানান।
এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘আমি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী। অদ্য ৭ জানুয়ারি সকাল ৮ঘটিকা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হলে নৌকার প্রার্থী মো: মুজিবুল হক এর সন্ত্রাসী বাহিনীরা ভোট কেন্দ্র দখল করে সন্ত্রাস ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড শুরু করে এবং আমার এজেন্টদেরকে জোরপূর্বক কেন্দ্র হতে বাহির করে দেয়। তারা প্রকাশ্যে প্রিজাইডিং অফিসারের সামনে ভোট কারচুপি সহ নানা রকম অনিয়ম চালায়। স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে বারবার অবগত করা হলেও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এরূপ নিরব আচরণে জনমনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কোন পরিবেশ না থাকায় আমি ভোট বর্জন করলাম।’
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোট বর্জনের সংবাদ সমর্থক ও নেতাকর্মীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলার ট্রেনিং সেন্টার এর দোয়েল চত্বর এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুড়ি ফেলে মহাসড়ক বন্ধ করে দেয়। এ সময় উত্তেজিত নেতাকর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ ও পিকেটিং করে। পরে বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপের পাশাপাশি কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে।
এ বিষয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চৌদ্দগ্রাম-নাঙ্গলকোট) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু উত্তেজিত জনতা মহাসড়ক অবরোধ করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক রাখে।’
এর আগে সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনায় ৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। আহতরা হলো: উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের হাটবাইর এলাকার সৈয়দ মো: আজিজুল হকের ছেলে আমিনুল হক, পৌরসভা এলাকার পশ্চিম ধনমুড়ি এলাকার আব্দুল হক মোল্লা ছেলে মাহবুবুল হক মোল্লা বাবলু, ছাটিতলা গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে মো: জামাল, রামরায়গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে মো: মামুন, একই গ্রামের কাজী আব্দুল মতিনের ছেলে কাজী ডালিম।
এছাড়াও বেলা ১টায় নানা অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মুফতি মো: খোরশেদ আলম ও গণফোরামের প্রার্থী এডভোকেট আব্দুর রহমান জাহাঙ্গীর।