জয়পুরহাটে হঠাৎ করে জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। গত তিন দিনে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে প্রায় সাড়ে চারশত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। রোগীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসকরা। বেডে জায়গা না পেয়ে বেশিরভাগ রোগী মেঝে ও সিঁড়ির নিচে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে শীতের ও গরমের শুরুতেই শিশু ও বৃদ্ধের মাঝে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে এখন রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বেড না পেয়ে মেঝেতেই সেবা নিতে হচ্ছে রোগীদের। গত তিনদিনে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় সাড়ে চারশতাধিক রোগী। এ রোগের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না বয়স্ক নারী-পুরুষ এমন কি শিশুরাও। রোগীর বাড়তি চাপে হিমশিম খেতে হচ্ছে নার্স ও চিকিৎসকদের। দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও রোগীর স্বজনরা। তারা বলছেন, হাসপাতালের পরিবেশ অনেক নোংরা। হাসপাতালের বেড খালি না থাকায় বারান্দায় ও মেঝেতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন রোগীরা।
এরই মধ্যে গত দুই দিনে ১৮৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। রোগীর চাপে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বেডে জায়গা না পেয়ে হাসপাতালের মেঝে ও করিডোরে শুয়ে বসে চিকিৎসাসেবা নিতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা। রোগী এবং স্বজনদের পদচারণায় হাসপাতালে যেন পা ফেলানোর জায়গা নেই। চিকিৎসকরা বলছেন, শুষ্ক মৌসুম, অস্বাস্থ্যকর খাবার ও দূষিত পানির কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
শুধু জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালেই ছয় দিনে প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে এসেছে ৪৫ থেকে ৫০ জন রোগী। এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলার হাসপাতাল, বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও ডায়রিয়া রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ শিশু ও বয়স্ক রোগী।
ডায়রিয়া রোগ এড়াতে সচেতনতার বিকল্প নেই। আর বিশুদ্ধ পানি পান আর অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহারের পরামর্শ দিলেন, জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রাশেদ মোবারক। তিনি আরও বলেন, শুষ্ক মৌসুম, অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং পৌরসভার সাপ্লাই করা পানির কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। শহরে রাস্তার কাজ চলছে। পানির লাইন ফেটে যাওয়ার কারণে সাপ্লাই করা পানি দূষিত হয়ে এ সমস্যা হতে পারে। কয়েক বছরের তুলনায় এবারের মাত্রাটা বেশি। এক সপ্তাহে ডায়রিয়া আক্রান্ত প্রায় ৪০০ নারী, পুরুষ ও শিশুকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
এ হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের দুর্ভোগ ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন এমনটাই দাবী জেলাবাসীর।