নিজস্ব প্রতিবেদক।।
সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা চলমান স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন মিমাংসা শর্তে জামিন নিয়ে গোপনে দ্বিতীয় বিয়ের খবর শুনে প্রথম স্ত্রী স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর দাবিতে অনশনে বসেছে।
বুধবার ৫ জুলাই ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলাধীন জিয়ালা নলতা গ্রামে।এ সময় স্বামীর দাবিতে অনশনে বসা রিমা কে বেদম মারপিট করেছেন জাহাঙ্গীর হোসেন এর মা ও পরিবারের সদস্যরা।সূত্র মতে জানা গেছে দূ- সম্পর্কে আত্নীয়ের সুবাদে জিয়ালা নলতা গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের (৩১)সাথে মন দেওয়া নেওয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন উপজেলার রহিমাবাদ গ্রামের মোঃ রুস্তম সরদারের মেয়ে রিমা খাতুন (৩০)। সূ দীর্ঘ ১২ বছর প্রেমের পর উভয়ে খুলনা পড়াশোনা করা কালে ২৬-০১-২০১৯ তারিখে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিবাহ হয় সেখান থেকে খুলনাঞ্চলে বছর খানেক সংসার করেন এবং স্বামী কে রিমা তার প্রাইভেট পড়ানোর অর্থ দিয়ে ১ম শ্রেনীর নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলেন।পরবর্তীতে উভয় পক্ষের অভিভাবকেদের তাঁদের উপস্থিতিতে ইং ১৭-০৫- ২০২১ তারিখে ৫০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করে রেজিঃ বিবাহ সম্পন্ন হয়। অতঃপর উপজেলার শেখের হাট বাজারে রিমার পিতা জাহাঙ্গীর হোসেন কে একটি জুতোর দোকান করে দেন।এভাবে চলাকালে বিয়ের কিছুদিন পর জাহাঙ্গীর হোসেন সাতক্ষীরা সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ক্রাফট ইন্সষ্ট্রাক্টর পদে চাকুরীর ইচ্ছা পোষণ করেন। স্ত্রী রিমা খাতুন পিতার জমি বিক্রি বায়না পত্রের মাধ্যমে উক্ত চাকুরীর সকল ডোনেশন কৃত অর্থ বহন করেন।
প্রতারক জাহাঙ্গীর হোসেন চাকুরীর পাওয়ার পর তার আসল চরিত্র রিমার কাছে উম্মেচিত হতে থাকে। জাহাঙ্গীর হোসেন চাকুরীর এক মাস পর রিমার কাছে তার পিতার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে একটি মোটর সাইকেল দাবী করেন। রিমার পিতা মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে জামাইকে একটি মোটর সাইকেল দিতে শো রুমে নিয়ে যান। সেখানেই যৌতুক লোভী জামায় বেঁকে বসেন, তিনি গরিব শশুর এর কাছে দাবি করেন সুজোকি মোটরসাইকেল। সেটা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন রিমার পরিবার।যৌতুক ও নারী লোভী মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের নতুন চাকুরী বলে কথা, নতুন শহর চোখে রঙিন চশমা, তাও আবার সরকারি চাকুরী, রঙের শহরে চার পাশে অসংখ্য রঙ্গিন রমনীদের বিচরণ ।নারী লোভী এই প্রতারক খুব সহজেই খোলস পালটিয়ে রিমার উপর অমানুষিক অত্যাচার নির্যাতন শুরু করেন। মূল কারন রিমা দেখতে জাহাঙ্গীর হোসেন এর কাছে অসুন্দর। গায়ের রঙ শ্যামলা, অসুন্দর হবেনই না কেন সেতো চোখে পরেছে রঙ্গিন চশমা। নির্যাতিত রিমা খাতুন এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীর হোসেন কে আসামি করে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে, নারী শিশু -৫০/২২ নং এর একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় জাহাঙ্গীর হোসেন ইং ২৭-০২-২০২২ তারিখে মামলার বাদি রিমার সাথে সংসার করার জন্য মিমাংসা শর্তে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন প্রাপ্ত হয়েন। এবং ইং ১৮-০৪-২০২২ তারিখে আদালতে আদেশ অমান্য করায় জাহাঙ্গীর হোসেন কে বিজ্ঞ আদালত জেল হাজতে প্রেরণ করেন,অতঃপর পুনঃ প্রতারক জাহাঙ্গীর হোসেন সংসার করার জন্য মিমাংসার শর্তে জামিন নেই। জাহাঙ্গীর হোসেন এতটাই চৌকস প্রতারক মামলার হাজিরার আগের কয়েকদিন বাদি রিমার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন এবং স্ব শরীরে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যান এবং রিমা কে মামলায় জামিনের বিরোধিতা না করতে বলেন এবং তাকে কয়েকদিন পর বাড়িতে নিয়ে যাবেন বলে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মামলার ধার্য্য তারিখ পরিবর্তন করেন। এ সময় রিমা সরল বিশ্বাসে স্বামীর সাথে সুখের সংসার করার জন্য মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
সাম্প্রতিক রিমা জানতে পারেন যে তার স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন উপজেলার জাত পুর গ্রামে জনৈকা সালমা বেগমের মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়েকে বিয়ে করেছেন। বিধায় স্বামী আদালতের সাথে প্রতারণা করে মিমাংসা না করলেও রিমা খাতুন চলে যান স্বামীর বাড়িতে। আর সেখানে গিয়ে রিমা মারপিটের স্বীকার হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।এ বিষয়ে রিমা খাতুন জানান ১২ বছর প্রেমের সম্পর্কে পর বিয়ে এখন চাকুরী পাওয়ার পর আমাকে নির্যাতিত হতে হয়েছে। মিমাংসা কথা বলে বার বার বিজ্ঞ আদালতের আদেশ অমান্য করে এখন ২য় বিয়ে করেছে। আমি আমার সংসারে ফিরতে চাই।আমি স্বামীর সংসার করতে চাই। আমি ন্যায় বিচার চাই। এ বিষয়ে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কথা বলা সম্ভব হয়নি।