দেশের কিছু কিছু প্রবীণ রাজনীতিবিদ নিজেকে আড়াঁল করতে রাজনীতির ময়দানে সম্ভবত রঙ্গিন/ কালো চশমা ব্যবহার করেন আর দেশের সকল শিক্ষকেরা সাদা গ্লাসের চশমায় জ্ঞান দানের আলোয় শিক্ষার্থীর মেধা ছড়িয়ে দেন, তবুও দিন শেষে আইনের দৃষ্টিতে শিক্ষকগণের রাষ্ট্রীয় নিরস্ত্র সম্মান অথবা রাষ্ট্রীয় নিরস্ত্র সালাম পাওয়া যেন আকাশ কুসুম কল্পনা-রাষ্ট্রের কাছে মরণোত্তর নিরস্ত্র সম্মান ও সালাম প্রদানের দাবী জানিয়েছেন-লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার,কালীগঞ্জ করিম উদ্দিন পাবলিক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরি শিক্ষক সরওয়ার মোরশেদ
লেখক- সরওয়ার মোরশেদ
যদিও সারল্য প্রকৃতির বাংলাদেশের জাতিকে সম্মান দিতে চান? শিক্ষাকে যদি অনেক দূর এগিয়ে নিতে চান, তাহলে মানুষ গড়ার কারিগরদের আর্থিক সচ্ছলতার দিকে তাকান এবং শিক্ষকদের মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা অথবা রাষ্ট্রীয় নিরস্ত্র সালাম প্রদানের ব্যবস্থা করুন।এখন আর নৈতিকতা থেকে শিক্ষকের সম্মান বৃদ্ধি নয় বরং দক্ষতার ভিত্তিতে শিক্ষার পরিবেশ তৈরীর স্বার্থেই শিক্ষকগণের মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় নিরস্ত্র সম্মান অথবা রাষ্ট্রীয় নিরস্ত্র সালাম প্রদানের ব্যবস্থা নিন। পাশাপাশি জনগণের সবকিছুতে রাজনীতির ময়দানে রঙিন চশমা দিয়ে সবাইকে উজ্জ্বল দেখতে চান। এখন সবাই সাদা গ্লাসের চশমা দিয়ে পরিষ্কার ভাবে দেখলে বুঝবেন সাধারণ মানুষের কি সমস্যা আছে? সাধারণ মানুষ কি চায়?
বাংলাদেশের শিক্ষক, মানুষের জ্ঞান, বিবেক, মানসিকতা, মানুষ, সমাজ ব্যবস্থা সারল্য প্রকৃতির হাওয়ায় ও মেধার বিকাশ উন্নয়নের একমাত্র অংশীদার শিক্ষকদের মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় নিরস্ত্র সম্মান অথবা রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদানে এখন জাতিকে ভাবতে হবে। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের ফসল বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের।স্বাধীনতার অর্জনকৃত লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতের চৌকিদারের ন্যায় এখন এক-একজন শিক্ষক দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে পাহারা দিচ্ছেন এবং শিক্ষকগনেই স্বচ্ছ আলোয় পাওয়ারফুল সাদা চশমা চোখে দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পড়িয়ে রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত তৈরি করেন।অথচ এই শিক্ষকটির মৃত্যুর পর তার জন্য রাষ্ট্রীয় জাতীয় পতাকাটি অদৃশ্য লুকিয়ে পড়ে।
রাষ্ট্রের স্বাধীনতার অর্জনকৃত লাল-সবুজের জাতীয় পতাকাটি বীরের সম্মানের প্রতীক। রাষ্ট্রীয় পতাকাটির সম্মান রক্ষার কর্ম হিসেবে রানারের ন্যায় অবিচল গতির শিক্ষকটির একদিন হঠাৎ মৃত্যু এবং মৃত্যুর পর এক রাষ্ট্রীয় জাতীয় পতাকা দিয়ে ঢেকেঁ মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা অথবা জাতীয় পতাকা দিয়ে ঢেকেঁ মরণোত্তর শিক্ষকটির সমাহিত কালে রাষ্ট্রীয় নিরস্ত্র সালাম প্রদান করা যাবে না কেন?
বাঙালি জাতির মেধা বিকাশের চাষাবাদ করেন শিক্ষকেরা রানারের গতিতে, সুদীর্ঘ ৩০-৩৫ বছর ধরে অবিরাম দিনের পর দিন জাতীয় পতাকাকে দৈনিক স্যালুট ও সম্মান জানিয়ে আসছেন এবং জাতীয় সংগীতকে বুকে ধারণ ও লালন করে শিক্ষকগনেরাও ছাত্রের ন্যায় শ্রদ্ধার সহিত জাতীয় সংগীত গেয়ে যাচ্ছেন।
বাংলার সাধারণ জনগণ সবাই বিভিন্ন পেশায়/কর্মে নিয়োজিত আছেন ।কেবল জাতির জাতীয় স্বার্থে শিক্ষকগণ জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতের চর্চাটি শ্রদ্ধা ভরে স্মরণের কাজটি প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন। জাতির মেরুদন্ড মজবুতে,জাতির মেধা তৈরীর প্রকৃত কারিগর শিক্ষক। এই জাতির জ্ঞান- বৃদ্ধি ও মেধা শক্তি কিন্তু বৃহৎ শক্তি। জ্ঞান সমৃদ্ধির ভান্ডার শিক্ষকগণেরা ও আইনজীবীগণেরা। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শিক্ষকগণ ।জাতির মেধা বিকাশের ফলে উন্নত কর্ম তৈরীর হাতিয়ার হল স্যারগণেরা। তাই আগামীর যে কোন গণতন্ত্র কামি সরকারকে বলব, জাতির জ্ঞান মেধা বিকাশ উচ্চতায় আনয়নের আর্থিক কর্ম সৃষ্টির যোগ্যতা তৈরীর কাজটি করার কারণে শিক্ষকদের মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় নিরস্ত্র সম্মান প্রদান করুন ।আমৃত্যু সম্মান পাওয়ার পেশার নাম শিক্ষকতা। যদি সারল্য প্রকৃতির জাতিকে সম্মান দিতে চান। যদি জাতিকে কর্ম উপযোগী করতে চান। তাহলে মানুষ গড়ার কারিগরদের আর্থিক সচ্ছলতার দিকে তাকান এবং শিক্ষকদের মরণোত্তর জাতীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা অথবা রাষ্ট্রীয় নিরস্ত্র সালাম প্রদানের ব্যবস্থা করুন। এখন সব রাজনীতিবিদগণ ভাবুন এবং আজীবন সম্মানের অংশীদার হউন।
আমাদের দেশের মানুষ গুলো সারল্য প্রকৃতির সারল্য প্রকৃতির।সারল্য প্রকৃতির মন বলেই মানুষগুলোর সরলতার সুযোগে কিছু কিছু রাজনীতিবিদ দেশের মানুষের সঙ্গে এখনো আড়াল থেকে রাজনীতি করার সুযোগ পেতে চায়।অনেক রাজনীতিবিদ নিজের চোখে কালো রঙ্গিন/চশমা পড়ে চোখের আড়ালে সবাইকে অন্ধকারের দেখতে চান। সারল্য প্রকৃতির জনগন যেন রাজনীতিবিদকে সরাসরি দেখতে না পান। সম্ভবত তাই কালো/রঙ্গিন চশমা পরেন।
রাজনীতিবিদগণ জনগণকে সামনে বেশিক্ষণ রাখতে চান না। সাধারণ মানুষগণ যেন কোন কিছুই বুঝতে না পারেন। বিজ্ঞান ও বলে সামনা- সামনি অথবা খালি চোখে-চোখে এক হয়ে শতভাগ এলোমেলো কথা বলাটা কিছুটা অসম্ভব হয়ে ওঠে।তাই,চোখে কালো অথবা রঙ্গিন চশমা না লাগিয়ে, এবং মুখোমুখি হয়ে অন্ধকার পর্দা আড়ালে না থেকে জনগণকে সরাসরি দেখুন এবং সত্য/মিথ্যার এলোমেলো কথাগুলো সবাই বক্তৃতায় কমিয়ে ফেলুন। তাহলে আমরা সাধারণ জনগণ সবাইকে সাধুবাদ জানাবো।
অনেক অধিদপ্তরে অফিসে এখনো চোখে-চোখে শরম এড়াতে, শিক্ষকদের বসার জন্য চেয়ার দিতে অথবা সম্মান দিতে প্রস্তুত থাকে না। বেশি দূরে নয় ধরুন শিক্ষকটি প্রয়োজনে যে কোন মন্ত্রণালয়ে যেতে চাইলে, অথবা কথা বলতে চাইলে বা চেয়ার পাওয়া তো দূরের কথা প্রবেশের জন্য হয়তো গেট পাশ টি পান না ।কারণ তিনি একজন সাধারণ শিক্ষক।হয়ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষকগণের জন্য এমনটি নাও হতে পারে ।উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষার শিক্ষকের হার মাত্র ০৩ ভাগের কম। বাকি ৯৭ ভাগ সাধারণ পর্যায়ের সকল স্তরের শিক্ষকগণ তাহলে কি করবেন?
এখন নীরবতা নয়, এখন সবাই সরব হউন এবং ভাবুন। শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধির পদক্ষেপ কেন প্রয়োজন? মর্যাদা দিলে আপনিও আপনার সরকার সম্মানিত হবেন। এটা সব ধর্মের কথা। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার এক গানে লিখেছেন, কাহারো জীবন ও কর্ম চিরকাল স্থায়ী থাকার নয় বরং মানুষের জীবন ও কর্ম পাল্টাবি—–এটাই নিয়ম। কেবল শিক্ষাই রয়ে যাবে।তাই আপনারা সবাই দায়িত্ব থাকুন এবং আগামীতে যে সরকার ক্ষমতায় আসীন হবেন, তারাই শিক্ষকের মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় মর্যাদার ঘোষণা ব্যবস্থা করেন ।দেশের শিক্ষক সমাজের প্রতি আপনাদের দায়িত্ব আছে, এটাই এড়াতে পারেন না। তাই বুঝে শুনে বিবেচনায় এনে সকল শিক্ষকদের মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা অথবা জাতীয় পতাকায় ঢেকেঁ মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় নিরস্ত্র সালাম প্রদানের ঘোষণা দিয়ে রাখতে পারেন। এতে খুব বেশি সরকারের সমস্যা হবে না।বরং শিক্ষকগণ স্বর্ণ শিখরে পৌঁছাবেন।
জনসভার বক্তৃতায় এলোমেলো কথাগুলো অকপটে বলার জন্য কোন কোন রাজনীতিবিদদের রঙ্গিন/ কালো চশমা ব্যবহারের ন্যায় এখনো দেশের বহু সরকারি অফিসে শিক্ষকদের ছাড় সম্বন্ধ করতে লজ্জা পান। মনে মনে বলেন উনি তো আমাকে পরান নাই? তাহলে কিসের স্যার ?কিসের মর্যাদা? আমি বলব সকল শিক্ষকেরই সমান। সবাই মহান পেশায় নিয়োজিত। এখন শিক্ষকদের জন্য করুণা নয়, বরং সার্বিকভাবে প্রাপ্য অনুযায়ী সকল শিক্ষকদের মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় সম্মান পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। এই দেশের বেশিরভাগ মানুষ সারল্য প্রকৃতির, অসহায় ও সাদা মনের মানুষ ।তাই অর্থ ও ক্ষমতার মার – প্যাঁচে মানুষ গুলোর কাছে মূল্যায়ন কম হয়। আমাদের দেশের বিভিন্ন কারণে অপরাধের বিচার পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে। তার জ্বলন্ত প্রমাণ বঙ্গবন্ধুর খুনের বিচার পেতে প্রায় ৪৫ বছর লেগেছে। যত বড় পদ মর্যাদায় থাকুন না কেন আপনার কিন্তু শিক্ষা গ্রহণের শুরু এবং শেষ পর্যন্ত শিক্ষক ছিলেন। তাহলে আপনি ওই শিক্ষকদের একটু জাতীয় পতাকা দিয়ে ঢেকেঁ মনোত্তর রাষ্ট্রীয় নিরস্ত্র সালাম /সম্মান দিতে চাইবেন না কেন? এটা এখন শিক্ষকের অধিকার রূপ নিবে।
আমরা যদি এখনই আমাদের সন্তানদের কর্মের স্বার্থে কারিগরি প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা গ্রহণের আগ্রহী হয়ে না উঠি, তবে অচিরেই দেশে ধনী-গরীবের বৈষম্য বিরাট আকারে যেতে পারে এবং স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের অন্তরায় হতে পারে, পাশাপাশি দেশের স্থিতিশীলতা হারিয়ে যেতে পারে। এখন সিদ্ধান্ত নিন কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের ।কিছুদিনের জন্য হলেও সাধারণ শিক্ষা শতকরা ৫০ ভাগ কমিয়ে ফেলুন। তবেই বর্তমান প্রযুক্তি ও ডিজিটাল পদ্ধতি বাংলাদেশ, আগামী স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত হলে পুনরায় আগের সকল শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরে আসবেন। অসুবিধা কোথায়? এ বিষয়ে সরকারকে শুধু ভাবতে হবে এমনটি নয়, বরং সরকারকে আবশ্যিক/ সরাসরি দায়িত্ব নিতে হবে। তাহলে হয়তো দেশে কারিগরি শিক্ষার কর্মের ফলস দেশে আসতে পারে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে তাই হচ্ছে। বিশ্বের মধ্যে চীন শিক্ষা, শিক্ষকের মর্যাদা, কারিগরি শিক্ষার মূল্যায়ন বেশি করে বিধায়, চীনে কর্ম বলতে ৮৫ ভাগ প্রযুক্তির কর্মকে বুঝায়। তাই বিশ্বের মধ্যে সেরা অর্থনীতিতে মজবুত ও প্রযুক্তির রোল মডেলের প্রথম সারির দেশ হিসেবে চীনকে বুঝায়।
সর্বোপরি সকলকে বলবো সবার দেশ বাংলাদেশ,এই দেশে বঙ্গবন্ধু নিজেও স্বচ্ছ সাদা মোটা ফ্রেমের পাওয়ারফুল চশমা পড়ে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন। যা আজও পৃথিবীতে ৭ই মার্চ এর ভাষণ দেশ সৃষ্টির স্বপ্নটি শিক্ষকের স্বচ্ছ সাদা মোটা ফ্রেমের পাওয়ার ফুল চশমার ন্যায় পথ দেখিয়ে ছিলেন। তাই বঙ্গবন্ধুর সাদা গ্লাসের মোটা ফ্রেমের চশমা পড়া থেকে আমাদের কি শিক্ষা নেওয়া উচিত? অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু ও শিক্ষকের ন্যায় জ্ঞানের আলো দেখাতে পেরেছিলেন এবং স্বাধীনতার পথের আলো ছড়াতে-দেখাতে পারতেন বলেই তখন দেশ স্বাধীন হয়েছে এবং তিনি আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। জাতি চাই রাষ্ট্র উন্নত হোক এবং তার কেবল শিক্ষার মাধ্যমেই সম্ভব ।আর এর বাহক শিক্ষকদের জাতীয় স্বার্থে আমৃত্যু / মরণোত্তর কাল জাতীয় পতাকা দিয়ে একটু ঢেকেঁ রাষ্ট্রীয় নিরস্ত্র সালামের ন্যূনতম সম্মান প্রদর্শন করার জন্য দেশের সকল স্তরের শিক্ষকের পক্ষে এই আকুতি করা হইল।
শিক্ষকদের মরণোত্তর দাবিটির বাস্তবায়ন ও কারিগরি শিক্ষা প্রসারের
সমন্বয়ক
সরওয়ার মোরশেদ মোড়ল (কারিগরি শিক্ষক) কালীগঞ্জ করিম উদ্দিন পাবলিক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়,কালীগঞ্জ,লালমনিরহাট।
ই-মেইল smorshedmoral@gmail.com/
mobile –01714-333587