ভয়ংকর ঋণের কবলে পড়ছে ব্রিটেন। মৌলিক চাহিদা আর সংসারের ঘানি টানতে গিয়ে মাস শেষের আগেই ধারদেনায় জড়িয়ে পড়ছে দেশটির লাখ লাখ মানুষ। ব্রিটেনের চলমান মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি দেশটির সাধারণ নাগরিকদের জীবনযাত্রার মানকে বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। দরিদ্র পরিবারগুলোর ঋণের হার এতটাই বেড়েছে যে ইতোমধ্যেই বিশেষজ্ঞরা একে ‘ঋণের টাইমবোম’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। গার্ডিয়ান।
জোসেফ রাউনট্রি ফাউন্ডেশনের (জেআরএফ) বিশ্লেষণ অনুসারে, ব্রিটেনের ২.৩ মিলিয়ন নিম্ন আয়ের পরিবার প্রয়োজনীয় বিল পরিশোধের জন্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার ছাড়াও বিভিন্নভাবে ঋণ নিচ্ছে। প্রায় ৬ মিলিয়ন নিম্ন আয়ের পরিবারে অরক্ষিত ঋণ রয়েছে, যা ক্রেডিট কার্ড, ক্রেডিট ইউনিয়ন ও ব্যক্তিগত ঋণদাতাদের কাছ থেকে নেওয়া। এর মধ্যেই আবার শোনা যাচ্ছে, আবারও সুদের হার বাড়বে ব্রিটেনে। উদ্ভূত এ খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে ফায়দা ওঠাচ্ছে কিছু সংস্থা। যারা সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন লোভনীয় বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে অনুপযুক্ত ঋণ পরিশোধের পদ্ধতিগুলো সামনে আনছে। স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোকে টার্গেট করেছে, যা পরিবারগুলোকে আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেবে।
অর্থনৈতিক দুর্ভোগের এ সংকট মুহুর্তে লাখ লাখ নিম্ন আয়ের পরিবার অসুরক্ষিত ঋনের ওপর নির্ভর করে চলেছে। কিন্তু সুদের হার ক্রমাগত বৃদ্ধির সাথে সাথে এ বিকল্প পথটি তাদের জন্য কতটা ফলপ্রসূ হতে পারে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। জেআরএফ-এর সিনিয়র অর্থনীতিবীদ রাচেল ইয়ারওয়াকার বলেন, ‘জীবন সংকটের এ ব্যয় একটি বিপজ্জনক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করতে পারে।’ সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে উঠবে। যা দেশসহ দেশের মানুষকে হুমকির মুখে ফেলবে।
উত্তর আয়াল্যান্ডের এনিসকিলেনের বাসীন্দা জুলিয়ানা রিচমন্ড (৫১) তিন দশক আগে বকেয়া তৈরি করেছিলেন। যখন তিনি একটি নারী সহায়তা আশ্রয়ে চলে গিয়েছিলেন। পরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার চাকরি চলে যায় এবং তিনি বিল পরিশোধে ব্যর্থ হন। কিন্তু এই বছরের ক্রমবর্ধমান ব্যয় এটিকে আরও কঠিন করে তোলে। এখন তিনি সাহায্যের জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে দুর্বল পরিবারগুলোর জন্য আয় বাড়ানোর উপায়গুলো সন্ধান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে একজন সরকারি মুখোপাত্র বলেন, ‘আমরা জানি মানুষ ক্রমবর্ধমান মূল্যে সাথে লড়াই করছে। এ কারণে আমরা প্রতি পরিবারে ৩ হাজার ৩০০ পাউন্ড মূল্যের সহায়তা প্রদান করছি।’ আরও বলেন, ‘আমরা মুদ্রাস্ফিতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সুবিধা বাড়িয়েছি।’