এমরান মাহমুদ প্রত্যয়, নওগাঁ:
শাপলা বিক্রি করে উপার্জিত অর্থে চালায় শাহাদুলের সংসার - চার থেকে পাঁচ বছর আগে থেকে বর্ষামৌসুমে তিনি শাপলা বিক্রি শুরু করে। শাপলা বিক্রি তার মৌসুমি আয়ের একটি উৎস। প্রতিবছরের মতো এবারো নওগাঁর আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের আদর্শ গ্রাম এলাকার শাহাদুল ইসলাম জীবিকা নির্বাহ করছেন।
গ্রামীণ জনপদের হাট বাজার গুলোতে বিল থেকে সংগ্রহ করা শাপলা তুলে ফেরি করে বিক্রি করে। শাপলা বিক্রি করে চলে তার চার সদস্যের সংসার। বর্তমান সময়ে দ্রবমুল্যের উর্ধগতিতে স্থবির হয়ে পড়েছে গ্রামীন জনজীবন।
বিশেষ করে কাঁচা তরিতরকারি খাদ্য তালিকায় প্রতিদিনের একটি অপরিহার্য খাদ্য। বর্তমান সময়ে উর্ধগতির বাজারে মেঠো শাপলা সাধ্যের মধ্যে হওয়ায় বেড়েছে ব্যাপক চাহিদা।
আমাদের দেশের জাতীয় ফুল শাপলা দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি তরকারি হিসাবে এটি খেতে বেশ সুস্বাদু।শাপলা তরকারি হিসেবে কেউ খায় শখ করে আবার কেউ খায় অভাবে পড়ে।
গ্রামীণ জনপদের অভাবগ্রস্ত বা নিতান্তই গরিব মানুষেরা বর্ষা মৌসুমে ডোবা জমি অথবা বিল থেকে শাপলা তুলে তা দিয়ে ভাজি ভর্তা ছাড়াও বিভিন্নভাবে তরকারি হিসাবে ভাতের সাথে আহার করে থাকেন।
আর শহরের ভোজন রসিক মানুষ শখের বসে মৌসুমে ২-৪ দিন শাপলার ছোট মাছ তরকারি ভাজি ভর্তা এসব সৌখিনতার সাথে খেয়ে থাকেন।
বর্ষা মৌসুমে কৃষি জমি পানির নিচে তলিয়ে থাকায় এ মৌসুমে শাপলা ব্যাপক ভাবে জন্মায় ডুবে থাকা ফসলি জমি ও বিলে।
স্বল্প আয়ের মানুষের এ মৌসুমে তেমন কোন কাজ না থাকায় অনেকেই শাপলা সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিভিন্ন বয়সের মানুষ মৌসুমি ব্যবসা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এ পেশায় কোন পুঁজির প্রয়োজন না হওয়ায়।
সৌন্দর্য আর নয়নাভিরাম মনোমুগ্ধকর দৃশ্য যেন প্রকৃতির সাথে মিতালি করছে,বিলের মাঝে ফুটে থাকা শাপলা ফুল।
এই বর্ষা মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন খালে বিলে শাপলা ফুল ফুটেছে যা দেখে মুগ্ধ গ্রামীণ জনপদের প্রকৃতি প্রেমিরা।
শাপলা সংগ্রহকারী শাহাদুল ইসলাম বলেন,ভোর হলেই বিলের মাঝে নৌকা নিয়ে ঘুরে ঘুরে তারা শাপলা সংগ্রহ করি।
তারপর তা বিভিন্ন হাট বাজারে ১০ টাকা আটি হিসেবে বিক্রি করি। একেক জন ৫০ থেকে ৬০ আটি(৬পিস শাপলায় এক আটি)শাপলা সংগ্রহ করা যায়।
শাপলা সংগ্রহকারী শাহাদুল ইসলাম আরো বলেন,মেঠো শাপলা তরকারি হিসাবে খুবই মজাদার একটি সবজি খাদ্য। বর্তমানে ঊর্ধ্বগতি দ্রব্যমুল্যের সবজি বাজারে অনেকটা সাধ্যের মধ্যে তাই এর চাহিদা বেড়েই চলেছে বলে জানিয়েছেন শাপলা বিক্রেতা।
শপলা ফুল ক্রেতা মো.মোস্তাফিজুর বলেন,আমাদের জাতীয় ফুল শাপলা। শুধু জাতীয় আর সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে নয় এটি সবজি হিসাবে খুবই ভালো। তাই প্রতি সপ্তাহে একবার হলেও ১/২ আঁটি শাপলা ফুল কিনে নিয়ে যায়।এতে শিশুরা দেখে জানতে শিখতে পারে বাংলাদেশর জাতীয় ফুল শাপলা।