তন্ময় দেবনাথ রাজশাহী জেলা বাঘা
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী -৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনে খাতা কলমে ছয়জন প্রার্থী থাকলেও প্রচার প্রচারণায় রয়েছে মাত্র তিনজন। এরা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব মো: শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ( স্বতন্ত্র) কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব মো: রাহেনুল হক রায়হান ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দলোন (বিএনএম) নোঙর প্রতীকের প্রার্থী মো: আব্দুস সামাদ।
তবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব মো: শাহরিয়ার আলমকে ঘিরে নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করার পাশাপাশি দুই উপজেলার আওয়ামী লীগ সহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নৌকা প্রতীকের প্রচারণায় অংশগ্রহণ করায় ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মো: শাহরিয়ার আলম।
দুই উপজেলা ঘুরে জানা যায়, শাহরিয়ার আলম নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটানা পরপর তিনবার নির্বাচিত হওয়ায় আসনটিতে মজবুত ভীত গড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর আগে আসনটি বিএনপির দখলে ছিল। বর্তমানে এই আসনের ৩ টি পৌরসভা ও ১৩ টি ইউনিয়নের মধ্যে সিংহভাগ পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ক্ষমতাসীনদের দখলে থাকায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিজয়ের দারপ্রান্তে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মো : শাহরিয়ার আলমের নৌকা। শাহরিয়ার আলম এই জনপদের এমপি নির্বাচিত হয়ে পাল্টে ফেলেন দীর্ঘদিনের অবহেলিত চারঘাট-বাঘা উপজেলার জরাজীর্ণতা। বর্তমানে তিনি এ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। দায়িত্ব পালন করেছেন দুই মেয়াদে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে চতুর্থবারের মতো নির্বাচন করছেন তিনি। গত ১৫ বছরে অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে এলাকার উন্নয়নে সরকারী, বিদেশী বিভিন্ন সংস্থা এবং ব্যক্তিগত অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে চারঘাট-বাঘা উপজেলাকে একটা আধুনিক ডিজিটাল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালান। ইচ্ছে থাকলে উপায় হয় এবং চেষ্টা করলে সফল হয়। এ কথাগুলোর সত্যতার প্রমাণ দিয়ে সফলও হয়েছেন শাহরিয়ার আলম এমপি। চারঘাট-বাঘাবাসীর বিভিন্ন প্রয়োজনে বিশেষ করে চিকিৎসা, বাসস্থান নির্মাণ, গরীবের বিয়ে, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ ইত্যাদিতে সাহায্য করা বাবদ প্রতিমাসে নিজস্ব অর্থায়নে ব্যক্তিগতভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়ে সহযোগিতা করেন তিনি । দুই উপজেলার এমন কোন গ্রাম নেই যে গ্রামে তার ব্যক্তিগত অনুদান পৌঁছে নাই। ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা, হার্টের রিং পড়ানো, বিবাহযোগ্য অসহায় বাবা-মায়ের কন্যার বিয়ের খরচ হতে আরম্ভ করে গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরীর টাকা প্রদান করা,অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণে সহায়তা নিত্যদিনের কাজে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও অনেক জনপ্রতিনিধিকেও আর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে রিং পড়ানোর টাকা প্রদান, মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসার ব্যয় বহন করার অনেক উদাহরণ রয়েছে। এইরকম বরাদ্দ ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সরকারী বরাদ্দের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বিভিন্ন গ্রামের রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজ মসজিদ মন্দির, বাজার, বিদ্যুতায়নসহ নানাবিধ উন্নয়ন সাধিত হয়েছে এই জনপদে তারই মাধ্যমে। তিনি তার কর্ম দিয়ে এই জনপদের মানুষের অতি আপন ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেন।
চারঘাট ইউনিয়ন এলাকার ভোটার আহসান রনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার শান্তি শৃঙ্খলার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করে আসছে। এই সরকারের আমলে দেশে নজিরবিহীন উন্নয়ন হয়েছে। দেশের এই উন্নয়নের চাকা সচল রাখতে এই অঞ্চলের সাধারণ ভোটারগণ নৌকা প্রতীকের বিকল্প কিছু ভাবছেন না।
বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের হাবাসপুর গ্রামের বিধবা বেবি বেওয়া (৫৫) বলেন, হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েছি, স্বামী মারা যাওয়ার পর প্রতিবন্ধী এক কন্যা সন্তান নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, থাকার ঘর ছিলো না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে জমিসহ একটি পাকা বাড়ী করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার গরীব দুঃখী অসহায় পরিবারকে সব সময় সহযোগীতা করে চলেছে। নৌকা প্রতীকের সরকার আবারো দরকার, তাই এবার এই এলাকার আমরা ভোটারেরা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহরিয়ার কেই ভোট দিবো।
চারঘাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা প্রভাষক মাহাতাব সরকার বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চারঘাট-বাঘা নির্বাচনী এলাকায় নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। চারঘাট-বাঘার চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক ছাড়া বিকল্প কিছু ভাবছেন না ভোটারেরা।
বাঘা থানা মোড়ের এক দোকানী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বর্তমান সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সরাসরি যোগাযোগ। তিনি গত বছর গুলোতে যে ভাবে প্রধানমন্ত্রীর থেকে বরাদ্দ নিয়ে এসে এলাকার উন্নয়ন করেছে তাকি স্বতন্ত্র প্রার্থী বা অন্য কেউ পারবে? আমরা নৌকার প্রার্থী শাহরিয়ার কেই ভোট দিবো। তিনি পাস করলে এলাকার আরো উন্নয়ন হবে।
বাঘা উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান পিন্টু বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব মো : শাহরিয়ার আলম তার নির্বাচনী এলাকা চারঘাট-বাঘায় গত ১৫ বছরে সকল ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন করেছে এতে করে এই আসন আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটিতে পরিনত হয়েছে। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাধারণ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নৌকার বিজয় প্রায় শতভাগ নিশ্চিত।
বাঘা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন বলেন, নির্বাচনী এলাকাজুড়ে নির্বাচনী ইমেজ চলছে। বিগত ২০০৮ সন থেকে ২০২৩ সন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ একাধারে ১৫ বছর দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকায় দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। দেশের এই চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে দেশকে উন্নয়নশীল স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করতে জনগণ প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে রাজশাহী-৬ আসনে নৌকা মনোনীত প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মো : শাহরিয়ার আলম কে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করা সহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে আবারো ক্ষমতায় বসাবে জনগণ।