লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাট জেলা কারাগারা লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছিল।এই লুটপাটের রাজা কারাগারটির জেলার আবুল ফাত্তাহ ও স্টোর বাবু আব্দুল রহিম।
অনুসন্ধানে জানা যায়,১৯৯৭ সালে লালমনিরহাট পৌরসভার তেলিপাড়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় জেলা কারাগার।সিমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এক সময় কারাগারটিতে ছিল মাদকের আখড়া।কিন্তু বর্তমান জেলার আবুল ফাত্তাহ ২০২০ সালে লালমনিরহাটে যোগদানের পরে মাদক মুক্ত করেন।জেল সুপার না থাকায় কারাগারটির একক রাজত্ব চলে আসে তার হাতে।
নিয়ন্ত্রণ নেন কারা ক্যান্টিন।ক্যান্টিনের বাজার তিনি নিজ হাতে করেন।শুরু হয় মহামারী করোনা।বন্দিদের সাথে সাক্ষাত বন্ধ হয়ে যায় স্বজনদেন।বন্দিদের পিসির টাকা লোপাট করতে আবুল ফাত্তাহ আটেন অভিনব ফন্দি।কারা ক্যান্টিনে ৫ টাকার গুল বিক্রয় করা হয় ২৫ টাকা,১৫ টাকা দামের বেঙ্গল বিড়ি বিক্রয় করা হয় ২৫ টাকা।গোল্ড লিপ সিগারেট আনা হয় সৈয়দপুর থেকে।অনেক বন্দির অভিযোগ এই সিগারেট দুই নাম্বার।রান্না করা একটি ডিম ৩০ টাকা,ছোট সাইজের বাটা মাছ ৩০ টাকা পিছ,নামে মাত্র সুপারিসহ পানের দাম ৫ টাকা।এ ছাড়াও করা ক্যান্টিনের সকল পন্যের দাম বাহির থেকে অনেক বেশি।কারা ক্যান্টিনেরর খাবারের বিক্রয় বাড়াতে সরকারি খাবারের মান খুবই নিম্ন মানের।যা মুখে দেয়া যায় না।
লালমনিরহাট কারা ক্যান্টেনে মাসে বিক্রয় হয় প্রায় ৭ লক্ষ টাকা।কারা ক্যান্টিনে বেশি বিক্রয় হয় গুল,সিগারেট,বিড়ি ও পান।দাম বেশি হওয়ায় লাভের পরিমান মাসে প্রায় ২ লক্ষ টাকা।আর এসব লাভের বেশির ভাগ টাকা চলে যায় জেলার আবুল ফাত্তাহর পকেটে।সে হিসেবে দুই বছরে তিনি লোপাট করেছেন প্রায় ৪৮ লক্ষ টাকা।
কিন্তু বিপত্তি ঘটে ২০২২ সালে নতুন জেল সুপার ওমর ফারুক যোগদান করায়।তিনি কারা ক্যান্টিনকে আবার নতুন রুপে সাজান।সেই থেকে গুল ৬ টাকা ও বেঙ্গল বিড়ি ১৫ টাকা দরে বিক্রয় করা হচ্ছে।আর অন্য সকল পন্যের দাম একই আছে।
জেলার আবুল ফাত্তাহ বদলি হয়েছে।দুই একদিনের মধ্য তিনি লালমনিরহাট থেকে চলে যাবেন।তার পকেটে কারা ক্যান্টিনের টাকা কি তিনি সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন?এমন প্রশ্ন এখন জেলা বাসির মনে।
করোনার সময়ে জেলে থাকা বন্দি কাকিনার সব্বুর,কালীগঞ্জের লিয়াকত ও বটতলার রহমত বলেন,জেলার আবুল ফাত্তাহ কারা ক্যান্টিনের লক্ষ লক্ষ টাকা লোপাট করেছেন।তার সময়ে সরকারি খাবার মুখে দেয়া যেত না।
জেলার আবুল ফাত্তাহ বলেন,ভাই করোনার সময়ে কোন কিছু পাওয়া যেত না।তাই বিড়ি ও গুলের দাম বেশি ছিল।টাকা লোপাট করেছি কথাটা সত্য নয়।
জেল সুপার ওমর ফারুকে সেল ফোনে কল করা হলে তিনি কথা না বলে ফোন কেটে দেন।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক ও জেলা কারাগারের সভাপতি মোহাম্মদ উল্যাহ সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।