সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী
সংশোধন হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, খুশি হবেন আপনারা
সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে সংশোধন আনছে, তাতে সাংবাদিকরা খুশি হবেন বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোরের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কী ধরনের সংশোধনী আনা হচ্ছে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটার জন্য আপনারদের একটু অপেক্ষা করতে হবে। আমি মনেকরি, আপনাদের পরামর্শ সরকারের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি এটুকু বলতে পারি— আইনের যে সংশোধন হচ্ছে তাতে আপনারা সবাই খুশি হবেন।’
তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। তার সফরে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। নতুন আঙ্গিকে আমাদের এ অংশীদারত্ব কাজে লাগাবো ও শক্ত করবো। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আলাপ হয়েছে। তাকে বলেছি— আমরা এ আইন সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী সেপ্টেম্বরে এ সংশোধনী পার্লামেন্টে তোলা হবে এবং পাস করা হবে বলে আশা রাখি।’
বৈঠকে উপাত্ত সুরক্ষা আইন নিয়েও কথা হয়েছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, সেখানে বলেছি—এটি নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে একবার বৈঠক করার পরে আবার একটা খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সেটি নিয়েও অংশীজনদের সঙ্গে বসা হবে বলে আমি আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর কাছ থেকে শুনেছি। ইমন গিলমোরকেও সে কথা বলেছি।’
‘শ্রম আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বলেছি, বাংলাদেশে শ্রমিকদের অধিকার জোরদার হয়েছে। এটি নিয়ে অনেক কাজ করেছি এবং করে যাচ্ছি। যে সব সমস্যা আছে, সেগুলো দূর হবে বলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে আশা ব্যক্ত করেছি। সেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা চেয়েছি।’
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘তাদের সাথে নির্বাচন নিয়ে বিশেষ কোনো আলাপ হয়নি। নির্বাচন নিয়ে তাকে কেবল বলেছি—প্রধান নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচন কমিশন নিয়োগে যে আইনটি আমরা করেছি, এটি এই উপমহাদেশে প্রথম। গেল অর্ধশত বছরে এমন আর কোনো আইন হয়নি। আমরা আইন করেছি অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য।
গেল সপ্তাহ দুয়েক ধরে অনেক বিদেশি প্রতিনিধি আসছেন, এ নিয়ে সরকার কোনো চাপ অনুভব করছে কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীটা এখন বিশ্বগ্রাম। এখানে বিভিন্ন দেশ পারস্পরিক সম্পর্ক ধরে রাখতে বিভিন্ন আলোচনায় যুক্ত হয়। আমি সে আলোকেই দেখছি। আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ।’
তিনি বলেন, আমাদের যেসব বন্ধুদেশ আছে, তারা আমাদের অবশ্যই অনেক কিছু জিজ্ঞেস করতে পারেন। আবার অনেক কথা তাদেরকে জিজ্ঞেস করতে পারি। কোথাও ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকলে এই আলোচনার মাধ্যমে তা দূর হয়। অনেক ক্ষেত্রে সেগুলো দূর হচ্ছে বলে মনে করি।
ইমন গিলমোর বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে। এই আইনের প্রয়োগ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন উদ্বিগ্ন। বিপুলসংখ্যক সাংবাদিক ও সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে এ আইনে মামলা হয়েছে। আইনমন্ত্রী আমাকে নিশ্চিত করেছেন, এ আইনটি সংশোধনে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আমরা আইনটি প্রকাশের অপেক্ষায় আছি। প্রকাশ হওয়ার পর আমরা আইনটি বিস্তারিতভাবে পরখ করে দেখবো।