প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ যতদিন সরকারে ছিল রংপুরে কখনো মঙ্গা হয়নি। খাদ্যের অভাব দেখা দেয়নি। দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়নি। বুধবার বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে কোনো মঙ্গা হয় নাই। হইছে? না। আওয়ামী লীগ সরকারে আসলে ও নৌকা মার্কায় ভোট দিলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। উন্নয়ন হয়। রংপুরেও সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। তিনি বলেন, নৌকা মার্কা ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নতি হয়, কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। নৌকা মার্কা ক্ষমতা আছে বলেই ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে। নৌকা মার্কা ক্ষমতা আছে বলে আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন, সেটাই আমি আপনাদের কাছে চাই।
তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়েছিল। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু হয়েছিল। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে এসে এই রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলা, বলতে গেলে বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমি ঘুরেছি। দেখেছি মানুষের হাহাকার। একসময় মিটিংয়ে আসলে দেখতাম, ছিন্ন, বস্ত্র, পেটে খাবার নাই, দরিদ্র মানুষ দেখেছি। আমাদের প্রতিজ্ঞা ছিল, যখনই সরকার গঠন করতে পারব, এই মানুষের ভাগ্য আমরা পরিবর্তন করব। দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করব। আজকে অত্যন্ত এটুকু বলতে পারি- আজকের বাংলাদেশে দারিদ্রতার হার কমাতে পেরেছি, ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যাণে কাজ করে। রংপুরের ভাগ্য পরিবর্তনে কেউ কাজ করে নাই। নৌকা মার্কা ক্ষমতায় এলেই কাজ হয়। নৌকা ছাড়া হয় না। নৌকা মার্কা ভোট দিয়ে আজকে দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে। আজকে হতদরিদ্র বলতে নেই, মাত্র পাঁচ শতাংশ। আল্লাহর রহমতে সেটুকু থাকবে না। কোনো মানুষ হতদরিদ্র থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন সরকারে ছিলাম তখনও মঙ্গা ছিল না। ২০০১ সালে যখন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসে তখন দুই হাতে টাকা পয়সা লুট করে। সে ও তার ছেলেরা মিলে এদেশে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। আবার দেশে মঙ্গা শুরু হয়। ২০০৮ এর নির্বাচনের পর আমি যে পদক্ষেপ নিয়েছি, তারপর থেকে এ দেশের মানুষের কোন কষ্ট হয় নাই।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের জনগণ আমার আপনজন, আমার সংসার। আপনাদের মাঝে খুঁজে পাই আমার বাবার স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ, বোনের স্নেহ। আপনাদের জন্য যদি প্রয়োজন হয় বাবার মতো জীবন দিতেও প্রস্তুত আছি। মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আমি। এর আগে দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় জনসভার কার্যক্রম। সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সাবেক সংস্কৃতিক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান এমপি, নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক একেএম ছায়াদত হোসেন বকুল প্রমুখ।
মহানগর আওয়ামী লীগের আহবায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মহানগরের যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাশেম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মাজেদ আলী বাবুল ও এ্যাড. আনোয়ারুল ইসলাম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, শাজাহান খান, খায়রুজ্জামান লিটন, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আলহাজ্ব নুরুজ্জামান আহমেদ , প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, দলের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় সদস্য এ্যাড. সফুরা বেগম রুমি, এ্যাড. হোসনে আরা ডালিয়া, সংরক্ষিত আসনের এমপি রাবেয়া আলী, কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যবৃন্দ সহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।