ছাতক প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের ছাতকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তার পাশে খোলা স্থানে দেদারসে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। এসব ময়লা-আবর্জনা পচেঁ বাতাসে ছড়াচ্ছে দূর্গন্ধ। নাক-মুখ বন্ধ করে চলাচল করছেন মানুষ। এতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। বছরের পর বছর ধরে খোলা স্থানে এখানে ময়লা আবর্জনা ফেলায় বিশাল বিশাল স্তুপে পরিণত হয়েছে। দূর্গন্ধে নাকাল অবস্থা। এ ময়লা আবর্জনা থেকে শুধু পরিবেশ নষ্ট হচ্ছেনা। ডায়রিয়াসহ নানা রোগ ছড়াচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর নেই কোন মাথা ব্যথা।
জানা যায়, সিলেট-সুনামগঞ্জ থেকে সড়ক পথে ছাতক পৌরশহরে প্রবেশের প্রথম সেতুর আগেই দেখা মিলবে ময়লা আবর্জনার ভাগাড়। সড়কের পূর্ব পাশের অংশের প্রায় একশো ফুট জায়গা জুড়ে রয়েছে বর্জ্যের স্তুপ। ময়লা ভাগাড়ের মধ্যখানে সড়ক ও জনপথের বিশাল একটি সাইনবোর্ড রয়েছে। আর ওই সাইনবোর্ডে লিখা আছে “এখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা নিষেধ! এই সাইনবোর্ড লিখেই তারা দায় এড়াচ্ছেন। কাছাকাছি যাওয়ার আগেই বাতাসে নাকে নিয়ে আসে দূর্গন্ধ। নাক মুখ বন্ধ করে দ্রুত এ স্থানটি অতিক্রম করতে হয়। ময়লা আবর্জনার স্তুপে কারণে আটকে থাকা পঁচা পানি গাড়ির চাকায় ছিঁটকে পড়ছে চলাচলরত মানুষ ও যানবাহনের উপর। খেঁাজ নিয়ে যানা গেছে, ছাতক পৌরসভার সকল ময়লা আবর্জনা ট্রাক দিয়ে ছাতক পৌর শহর থেকে এখানে দেদারসে ফেলা হচ্ছে। এতে মশার কারখানা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ওই ভাগাড়ের স্তুপে। ময়লার ভাগাড়ে মৌসুমের ফল-মূলসহ বিভিন্ন খাদ্য থাকায় খাবার সন্ধানে প্রায় সময় এখানে গবাদি পশু ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ এবং কুকুর দেখা যায়। এক কথায় ছাতক পৌরসভায় যাতায়াতে যখন নাকে দূর্গন্ধ চলে আসবে স্পট না দেখেই বলা যাবে এটি ছাতক পৌরসভার প্রবেশ পথের ময়লা আবর্জনার স্তুপের পঁচা দূর্গন্ধ। এছাড়া গোবিন্দগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গার উপর রয়েছে বাজারের বর্জ্য। এখানে মানুষজন যাতায়াতের ফুটপাতের পাঠাতনের রাস্তার উপরসহ ফেলে রাখা হয়েছে বজর্য। এতে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকসহ বাজারে আগত মানুষজন চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়। এছাড়া গোবিন্দগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্ট থেকে রেল পথ ও রাস্তার দুই পাশে বিশাল ময়লার স্তুপ রয়েছে। এই রেল পথের ময়লা আবর্জনা মাড়িয়ে প্রতিদিন গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, গোবিন্দনগর ফজলিয়া ফাজিল মাদরাসা ও গোবিন্দগঞ্জ আবদুল হক স্মৃতি কলেজের কয়েক শ’ শিক্ষার্থী তাদের প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাতক পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ফারাভী বলেন, বর্জ্য ড্রাম্পিংয়ের জন্য মাধবপুর এলাকায় একটি প্রজেক্ট নির্মাণ করা হয়েছে। শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। সারা দেশের সাথে এটিও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধন হওয়ার পর এইসব ময়লা আবর্জনা এখান থেকে অপসারণ করে বর্জ্য ড্রাম্পিংয়ে নেওয়া হবে। তখন আর ময়লা-আবর্জনা থাকবেনা। ছাতক সড়ক ও জনপথ উপ-বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী সালাহ উদ্দিন সোহাগ বলেন, ময়লা আবর্জনা সরিয়ে নিতে সম্প্রতি পৌরসভাকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। এর পরও তারা ময়লা আবর্জনা অপসারণ করছেন না। ময়লার আবর্জনার স্তুপের পঁচা জমা পানি সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এর পরও তিনি আগামী সমন্বয় সভায় এই বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানান। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার রাজিব চক্রবর্তী বলেন, ময়লার স্তুপের মাছি খাবারে বসলে মানবদেহে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ হতে পারে। ময়লাযুক্ত জমাপানি থেকে জন্ম নিতে পারে মশা। পানিবাহিত রোগও হতে পারে। ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরের জামান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি পৌরসভা, সড়ক ও জনপথ বিভাগের। তার পরও তিনি ময়লা আবর্জনা অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলবেন।