হাসান চৌধুরী, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় জাতীয়ভাবে প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক কে ভূষিত হয়েছেন সিরাজগঞ্জে ট্যালেন্ট সাইন্স একাডেমীর এর সদস্য আজিমুল হক সিয়াম।
গত (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩ টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন ঢাকায়, জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনষ্ছিত হয়। এ সময় সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দ্রিরা ( এমপি)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব মোঃ আব্দুল হামিদ। উল্লেখ্য জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত সেই ফাইনাল প্রতিযোগিতায় সাতটি বিভাগকে পরাজিত করে বিজয়ের মুকুট ছিনিয়ে নেয় সিরাজগঞ্জের উদীয়মান খুদে বিজ্ঞানী।
ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ তাকে ধীরে ধীরে বিজ্ঞানমনস্ক করে তোলে। ছোটবেলা থেকেই নিত্যনতুন প্রযুক্তি এবং প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে তা মানব কল্যাণে তার সুষ্ঠ প্রয়োগ ।এই সকল ভাবনাই চলতে থাকে ছোট্ট সিয়ামের চিন্তায়। সেই ভাবনা থেকেই সিয়াম তৈরি করে স্মার্ট ভেয়াকেল সিস্টেম। যানবাহনের নিরাপত্তা প্রদানে যেটি কাজ করবে। প্রযুক্তির মাধ্যমে কোন যানবাহনের দুর্ঘটনা হলে, সেকেন্ডেরও কম সময়ে পুলিশ এবং নিকটস্থ হাসপাতালে দুর্ঘটনা স্থলের লোকেশন সহ ডাটা চলে যাবে। যার ফলে উদ্ধারকারী দলের সহজ হবে দুর্ঘটনা স্থানে গিয়ে দুর্ঘটনা কবল সাধারণ মানুষের উদ্ধারকাজ সম্পন্ন করা। যার ফলে জনবহুল বাংলাদেশের যানবাহনের দুর্ঘটনা প্রবন এলাকায় দ্রুত উদ্ধার কাজ সম্পন্ন করা যাবে, ফলে বাঁচবে প্রাণ বাঁচাবে আমাদের প্রিয়জনদের। সেই সঙ্গে তার আবিষ্কৃত প্রকল্পটি এটিও নির্দেশ করবে যানবাহনের চালক নেশাগ্রস্থ কিনা। এছাড়াও একটি নিরাপত্তা ড্রোন বা চালকবিহীন বিমান সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত থাকবে। সিয়ামের এই প্রকল্পটি একে একে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা, সিরাজগঞ্জ জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করে জায়গা করে নেয় জাতীয় পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার। সিয়ামের এই আবিষ্কারটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় নতুন এক মাত্রা যোগ করবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি।
এই অভাবনীয় অর্জনে সিরাজগঞ্জবাসী গর্বিত। সিরাজগঞ্জ জেলায় বিজ্ঞানমনস্ক আগামী প্রজন্ম এবং বিজ্ঞান গবেষণায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভূমিকা রেখে চলেছে ট্যালেন্ট সাইন্স একাডেমী তারই বহিঃপ্রকাশ আমাদের এই খুদে বিজ্ঞানী আজিমুল হক সিয়াম। ট্যালেন্ট বিজ্ঞানীর সভাপতি কে এম মশিউর রহমান সংলাপ জানান সিয়ামের মধ্যে রয়েছে অদম্য এক নেশা, যে নেশা বিজয়ের,যে নেশা অর্জনের এই নেশাই আজকে সিয়ামকে এই সাফল্য এনে দিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে। আমি মনে করি প্রত্যেকের মাঝেই রয়েছে সিয়ামের মত জয় করা সেই নেশা আমাদের শুধু সেই নেশাটাকে জাগিয়ে তুলতে হবে আর সেই কাজটি সফলতার সঙ্গে করে যাচ্ছে ট্যালেন্ট সাইন্স একাডেমী এবং ইনশাল্লাহ আগামীতেও সিরাজগঞ্জবাসী তথা সারা বাংলাদেশের আগামী প্রজন্মের জন্য কাজ করে যাবে ট্যালেন্টাইন্স একাডেমী।” লক্ষ্য আমাদের বিশ্বজোয় বিজয় হবে নিশ্চয়” এই স্লোগানকে বুকে ধারণ করেই যে এগিয়ে যাচ্ছে ট্যালেন্টাইন্স একাডেমী বিশ্বজয়ের দ্বারপ্রান্তে। সিয়ামের মতো এই ক্ষুদে বিজ্ঞানীরাই বদলে দেবে আগামী বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ,বদলে দেবে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের চিত্র।
ট্যালেন্ট সাইন্স একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাজমুল হাসান জানান সিয়াম বারবার ব্যর্থ হওয়ার পরও হাল ছেড়ে দেয়নি এই হাল ছেঁড়ে না দেওয়াই সিয়ামকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এছাড়া সিয়ামের পাশে সব সময় আমরা তথা ট্যালেন্ট সাইন্স একাডেমি ছিল সিয়াম কে সার্বিকভাবে সকল ধরনের সহযোগিতা ট্যালেন্ট সাইন্স একাডেমির পক্ষ থেকে আমরা করেছি।আজিমুল হক সিয়াম জানান – ছোটবেলা থেকেই আমার বিজ্ঞানযন্ত্র বিষয়ে আগ্রহ ছিল। এই আগ্রহ থেকেই আমার শিক্ষক নাজমুল হাসান ভাইয়ের মাধ্যমে ট্যালেন্ট সাইন্স একাডেমী সম্পর্কে আমি জানতে পারি। তিনি আমাকে ট্যালেন্ট সাইন্স একাডেমির সভাপতি কে এম মশিউর রহমান সংলাপ ভাই এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। ট্যালেন্ট সাইন্স একাডেমির মাধ্যমে আমি বিভিন্ন সেন্সর, আরডুইনো ও কোডিং সম্পর্কে ধারনা পাই। সংলাপ ভাই ও নাজমুল ভাই আমাকে বিজ্ঞাযন্ত্র তৈরিতে দিক নির্দেশনা দেন। তারপর থেকে আমি আমার আইডিয়া নিয়ে কাজ করা শুরু করি । বাংলাদেশের সরকদূর্ঘটনা রোধে আমি কিছু প্রকল্প এর পরিকল্পনা করি। সবার সযোগিতায় অবশেষে বিজ্ঞানপ্রকল্প টি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হই।